মাহফুজ মাহমুদের হ্যাকার গল্প। পর্বঃ 1

 দুপুরে কলেজ থেকে বাসায় আসলাম,তারপর কম্পিউটার রুমের দিকে গেলাম,দরজায় ফিংগারপ্রিন্ট সহ আরো কয়েকটা সিকিউরিটি দিয়ে লক খুললাম,তারপর ভিতরে ঢুকতেই আমার প্রিয় বিড়ালটি কাছে আসলো,কিন্তু মনে হচ্ছে একটু ভয় পেয়ে আছে। কিন্তু এমনভাবে কেন ভয় পেয়ে আছে বুঝলাম না,তখনই চোখ পড়লো কম্পিউটারের দিকে।

কম্পিউটারের দিকে চোখ পড়তেই মনে মনে হাসলাম,কারন কম্পিউটারের নোটিফেকেশন সিস্টেমে অন্যরকম একটা ইমুজি দিয়ে রাখছি,যেটা দেখতে একটু ভুতুরে টাইপের,আমার নিজের নিরাপত্তার জন্য এটা দিয়ে রাখছি,যাতে কেউ চাইলেও সহজে আমার ইনফরমেশন না নিতে পারে,
আর দেরি না করে কম্পিউটার সিস্টেম অন করলাম,তারপর নিজের একটা ফেভারিট গান প্লে করলাম,গানটা শুনতে শুনতে ডার্ক ওয়েব সাইটে প্রবেশ করলাম,এখন আমার কাজ হলো সমস্ত অপরাধীদেরকে খুজে দেখা,
আমার বাবা ছোট বেলা থেকে শুধু একটা জিনিসই বলতো,যদি আমার সামনে কোনো অপরাধ ঘটে,তাহলে যেনো থেমে না থাকি,যদি পারি তাহলে অপরাধীদেরকে সমূলে নিপাত করে দিবো,সেটা ভেবেই সবসময় এগোতে থাকি,তখনই চোখ পড়লো একটা কনভারশেসনের দিক, এটা মনে হচ্ছে কারো প্রাইভেট মেসেজ,
কারো প্রাইভেট মেসেজের মধ্যে থাকতে হয়তা,তাই বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম,কিন্তু মেসেজ গুলোর সিক্রেট কোডগুলোর দিকে নজর পরতেই তো আকাশ থেকে পড়লাম,একটা মেয়ে একটা প্রাইভেট গ্র্রুপের সাথে কথা বলছে,দেশের কোনো একটা গুরুত্বপূর্ণ সার্ভার হ্যাক করার চেষ্টা করছে এবার নিজের মন বলে উঠলো এদেরকে সমূলে নিপাত করতে হবে,
এরা দেশের নাগরিক হয়ে নিজের দেশের সাথে বেইমানি করছে। সরকার অবদিও জানতে পারে নাই এসব বিষয়ের কথা। যাইহোক আমি এসব ভাবতে ভাবতে ওদের সমস্ত কথা শেষ হয়,মেয়েটার নাম বের করে নিলাম,নামটা খুব মিষ্টি,মেয়েটার নাম রুহি,নামটা তো ভালো,কিন্তু কাজটা ভালো না,
তারপর ওদের কনভারশেষন গুলো কপি করে নিজের পেন ড্রাইভে রেখে দিলাম।যাতে করে ওদের এই দৃর্বল জায়গাতে আঘাত করতে পারি।
অনেক সময় ধরে চেষ্টা করলাম ওদের ভাষাগুলো বোঝার জন্য,৯০% বাদে একটা জিনিসও বুঝতে পারলাম না,তাই অর প্রান্তে থাকা সাজিদকে কল দিলাম,
--হ্যালো সাজিদ কেমন আছিস তুই..?
--আমি অনেক ভালো আছি,তোর কি অবস্থা..? আর হঠাৎ করেই ফোন করলি যে,কোনো সমস্যা হয়েছে নাকি..?
--সমস্যা না হলে কি তোর কাছে এমনি ফোন করি..? আচ্ছা শোন আমি একটা সিক্রেট কনভারসেশন দেখেছি,এইটা অনেকগুলো কোডের মাধ্যমে করা হয়েছে,আমি ৯০% বুঝতে পারছি,কিন্তু আর একটাও বুঝতে পারছি না,তোকে দেখ কোডগুলো পাঠিয়ে দিয়েছ,দেখে বল কিছু বুঝতে পারিস কিনা,
--ওকে আমি দেখছি,হ্যা এইটা খুব শর্টকার্ট কয়েকটা সিক্রেট মেসেজ,যারা একেবারেই এই লাইনে নতুন,তারা কিছুতেই বুঝতে পারবে না,আর এইটা অন্য কোনো গ্রুপের কনভারসেশন,আমরা যাদের হয়ে কাজ করি অর্থাৎ এনএসআই,এটা হয়তো তাদেরই সিক্রেট কিছু মেসেজ,তারা হয়তো আমাদেরকে না জানিয়ে কিছু করতে চাইছে,তাই এখন আমাদের উচিৎ এটা থেকে সরে আসা,নাহলে আমরা কোনো ফাদে পরে যাবো,
--আমি নিশ্চিত হয়েই তোকে বলেছি, এটা কখনো আমাদের এনএসআই এর মেসেজ হতে পারে না। আমি আমাদের সংগঠনের সবগুলো কোডিং জানি,যদি তারা কোনো কাজ করতো তাহলে আমি অবশ্যই জানতাম,কিন্তু এই মেসেজ গুলোর কোডিং দেখ,তারা দেশের নিরাপত্তা সার্ভার হ্যাক করে একজনকে মারতে চাইছে,তারা এই কাজের জন্য একটা মেয়েকে হায়ার করছে।
--তুই আমার একটা কথা শোন মাহফুজ, এসব ঝামেলায় নিজেকে জড়াস না,এসব আমাদের দেখে কি লাভ বল..? আমরা যে কাজ করি সেই কাজ থেকে তুই অন্য পথে চলে যাচ্ছিস,দেখ কে কাকে মারলো সেটা দেখে আামাদের লাভ কি আমরা জীবনটাকে উপভোগ করি এটাই আমাদের জন্য বেটার হবে,তুই একটা কাজ কর,ওখান থেকে লগ আউট করে বের হয়ে যা,আর এমনভাবে থাক যে আমরা কিছুই জানি না,
--আমি সেটা করতে পারবো না সাজিদ,কারন আমি ওদের কনভার্সনগুলো কপি করে রেখে দিয়েছি,
--ওই তোর মাথা কি খারাপ হয়ে গেছে নাকি…? কি করেছিস এইটা….
--দেখ সাজিদ এটার সাথে একজন নির্দোষ মানুষের জীবন জড়িয়ে আর তাকে এরা মারতে চাইছে। যেহেতু তারা দেশের সার্ভার হ্যাক করার চেষ্টা করছে,আর এটার জন্য কাউকে মারার চেষ্টা করছে,সেহেতু লোকটা একেবারে নির্দোষ। এখন তুই বল যে আমাকে সাহায্য করতে পারবি কি না..?
--আমার আর কি বলার আছে,ঠিক আছে আমি তোকে আমার সবটুকু দিয়েই সাহায্য করবো।
--আচ্ছা ঠিক আছে এখন তাহলে রাখি আবার পরে কখা হবে।
সাজিদের সাথে কথা বলা শেষ করতেই আম্মু ডাক দিলো,তাড়াতাড়ি কম্পিউটার অফ করে রুম থেকে বের হলাম,হা আম্মু বলো ডাকছো কেন..?
আম্মু, সেই যে কলেজ থেকে আসছিস,আর কোনো খবর নাই তোর,এই কম্পিউটিারের সামনে বসে কি করিস বল তো..? তাড়াতাড়ি খেতে আয়,
--হা আাম্মু আসতেছি,ওহহহ আপনাদেরকে তো আমার পরিচয় দিতেই মনে নাই,আমি সেই আপনাদের মাহফুজ ই আছি,বর্তমানে পড়ালেখা করি,বাবা মায়ের একমাত্র সোনার টুকরো রোপার টুকরো তামার টুকরো ছেলে,যাই হোক বাকি সবকিছু গল্পের সাথে থাকলে জানতে পারবেন। একদৌড়ে আম্মুর কাছে চলে আসলাম,এই যে আম্মু এবার আমাকে খাইতে দাও,
আম্মু, হা টেবিলে বস,আমি খাবার দিচ্ছি।
মাহফুজ, খাবার গুলো খেয়ে রুমে চলে আসলাম,রাতের দিকে আরো কিছুক্ষন কাজ করে ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে উঠে কম্পিউটার টা অন করলাম,দেখি আমার কম্পিউটার টা পুরো কালো হয়ে আছে,আমার চোখ তো পুরো কপালে উঠে গেলো,এটা কি হলো ..? আমার কম্পিউটার হঠাৎ করে কালো হয়ে আছে কেনো..?
এটা নিয়ে ভাবছি আর তখনি কম্পিউটার সিস্টেম অন হয়ে গেলো,কিন্তু এটা এখন আমার নিজের কন্ট্রোলে নেই সেটা খুব ভালো করে বুঝতে পারছি,হঠাৎ করে স্ক্র্রীনে একটা মেসেজ আসলো,
--আমাদের তথ্যগুলো দিয়ে দাও,
কথাটার মাথামুন্ড কিছুই বুঝলাম না,কে আবার কার তথ্য নিয়ে নিরো,মানে আমি আবার কার তথ্য নিয়ে নিলাম..?
কে মেসেজটি করছে সেটা দেখার জন্য নিজের তৈরি সার্ভারটা অন করলাম,মেসেজটা কে দিয়েছে সেটা সার্স করতেই দেখি সেই রুহি নামের মেয়েটা আমার কম্পিউটার নিজের দখলে করে নিয়েছে,ব্যাপারটা কি হলো,মেয়েটা জানলো কিভাবে যে আমি ওদের ডাটা নিয়েছি..?
চলবে…….
ভুলত্রুটি গুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
May be an image of 1 person
নবীনতর পূর্বতন

যোগাযোগ ফর্ম